দিল্লির হাসপাতালে ১২ করোনা রোগীর মৃত্যু অক্সিজেন সংকটে

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির একটি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে এক চিকিৎসকসহ ১২ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বাতরা হাসপাতালে অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দেয়। ভারতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো এমন ঘটনা ঘটল। এর আগে গত সপ্তাহে জয়পুরের গোল্ডেন হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটে ২৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।এনডিটিভির খবরে বলা হয়, মারা যাওয়া ১২ রোগীর মধ্যে ছয়জন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। মারা যাওয়া চিকিৎসকের নাম আর কে হিমথানি। তিনি ওই হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয়, ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সেখানে অক্সিজেন ছিল না। বেলা দেড়টার দিকে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৩০ জন রোগী অক্সিজেন পাননি।এর আগে গত ২৪ এপ্রিলও এই হাসপাতালে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তবে সেই দফায় কিছুক্ষণের মধ্যেই অক্সিজেন সরবরাহ পেয়েছিল তারা।
অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে দিল্লির কোটা সরকারের পূরণ করা উচিত। তাহলে এখানে কিছু জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে। দিল্লির অক্সিজেনের চাহিদা ৯৭৬ টন। অথচ গতকাল দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩১২ টন। তাঁর প্রশ্ন, ‘তাহলে দিল্লি শ্বাস নেবে কীভাবেএই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তিরস্কার করেছে দিল্লির হাই কোর্ট। আদালত বলেন, ‘আমরা কাজের কাজ দেখতে চাই. এখনইনি সবকিছুর ব্যবস্থা করতে হবে।…দিল্লিতে মানুষ মারা যাবে আর আমরা কি চোখ বন্ধ করে রাখব? আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিচ্ছি, যে মূল্যেই হোক দিল্লিকে আজকের মধ্যে এর চাহিদার ৪৯০ টন অক্সিজেন দিতে হবে। অক্সিজেন সরবরাহের ট্যাংকারগুলোও কেন্দ্রকে ব্যবস্থা করতে হবে। এই বরাদ্দ গত ২০ এপ্রিল দেওয়া হয়েছে। অথচ দিল্লি একদিনের জন্যও তার কোটার অক্সিজেন পায়নি।’
বাতরা হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক সুধাংশু বাঁকতা বলেন, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে অক্সিজেন ঘাটতিতে ভোগা রোগীদের মধ্যে আরও প্রাণহানির শঙ্কা নাকচ করা যায় না। তিনি বলেন, অক্সিজেন সরবরাহ যখন কম ছিল তখন এসব রোগীর অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা ছিল খুবই সামান্য। সেখান থেকে রোগীদের ফিরে আসা কঠিন।বিশ্বে এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের প্রকোপে সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে ভারত। এর মধ্যে শুধু দিল্লিতেই গত দুই সপ্তাহ ধরে দিনে ২৪ থেকে ২৮ হাজার নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে সেখানে প্রায় প্রতিদিনই করোনায় মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। দিল্লিতে বর্তমানে দিনে অক্সিজেনের আনুমানিক চাহিদা ৭০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে শুধু দিল্লি শহরেই প্রয়োজন দাঁড়িয়েছে ৪৯০ মেট্রিক টন। রাজ্য সরকার বলছে, সেখানে পুরো দিল্লি পাচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০০ মেট্রিক টন।