ইসরায়েলকে নিয়ে বিতর্কে মার্কিন রাজনৈতিক পরিবর্তন আসছে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলকে নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বহু যুগ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দল প্রায় শর্তহীনভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করে আসছে।
সব সময় বলা হয়েছে, ইসরায়েল নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিতর্কে সব সময় ফিলিস্তিনিদের হামলাকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে। প্রধান প্রধান মার্কিন গণমাধ্যমও ইসরায়েল আত্মরক্ষার্থে হামলা পরিচালনা করে বলে ফলাও করে প্রকাশ করে আসছে।
এবারে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিতর্কে নাটকীয় পরিবর্তন লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার তিনি সমর্থন করেন। তবে এবারে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। মার্কিন প্রশাসন এ যুদ্ধবিরতির জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে। ইসরায়েলকে যুদ্ধ বিমান সরবরাহ করে প্রতিপক্ষের ওপর আকাশ থেকে হামলার শক্তি বৃদ্ধির প্রয়াস নেওয়া হয়েছে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় বর্ধিত মানবিক সাহায্য বৃদ্ধিরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
২১ মে থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এবারেই প্রথমবারের মতো দেখা গেছে, ডেমোক্রেটিক দলের উদারনৈতিক পক্ষ এবং যুক্তরাষ্ট্রের উদারনৈতিক নাগরিক আন্দোলনের লোকজন প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদারনৈতিকদের এবারে সরব প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ফিলিস্তিনের পক্ষে। ডেমোক্রেটিক দলের অভ্যন্তরেও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানাতে চাপ প্রকাশ্য হয়েছে।
মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির এ পরিবর্তনের পেছনে দুটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর (এনপিয়ার নিউজ) রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা খালিদ তাঁর বিশ্লেষণে বলেছেন, সাম্প্রতিক নাগরিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মার্কিন উদারনৈতিকদের ওপর বৈষম্য ও বিদ্বেষ-বিরোধী মনোভাব এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীলদের প্রিয় পাত্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ফলে উদারনৈতিক মার্কিন লোকজনের সঙ্গে ইসরায়েলের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।