
চলতি বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে ইরানের একটি জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছিল ইন্দোনেশিয়া। প্রায় চার মাস পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে জব্দ করা ট্যাংকারটি ছেড়ে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। ন্যাশনাল ইরানিয়ান ট্যাংকার কোম্পানি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে ন্যাশনাল ইরানিয়ান ট্যাংকার কোম্পানি বলেছে, ইরানের জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকার এমটি হর্স ও এর নাবিকদের ১২৫ দিন পর গতকাল শুক্রবার মুক্তি দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। ইরানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগ সফল হয়েছে।ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠান আরও জানিয়েছে, এখন জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকারটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজের কাজ শেষ করবে। এরপর ইরানের জলসীমায় ফিরে আসবে।সন্দেহজনকভাবে জ্বালানি তেল পরিবহনের দায়ে নিজেদের জলসীমা থেকে ইরানের পতাকাবাহী ট্যাংকারটি জব্দ করেছিল ইন্দোনেশিয়ার কোস্টগার্ড। একই সময় পানামার পতাকাবাহী এমটি ফ্রেয়া নামে আরেকটি নৌযান জব্দ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
ওই সময় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, ট্যাংকার জব্দের ঘটনাটি কারিগরি বিষয়। বৈশ্বিক শিপিং খাতে এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়।গত এপ্রিলে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ জাকার্তা সফর করেন। এ সময় তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোসহ দেশটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে জব্দ করা ট্যাংকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, সেই বিষয়ে মুখ খোলেনি কোনো পক্ষ। শুধু বলা হয়েছিল, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা ও ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতার বিষয়ে আলোচনায় জোর দিয়েছে তেহরান ও জাকার্তা।
ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত ছয় বিশ্বশক্তির পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর তেহরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ওয়াশিংটন। বিশেষত ইরানের রপ্তানিমুখী জ্বালানি তেল খাতের ওপর জোরালো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার মুখে বৈদেশিক মুদ্রার আয়ে ধস ঠেকাতে বিভিন্ন উপায়ে জ্বালানি পণ্যটির রপ্তানি চালু রেখেছে তেহরান। এর মধ্যে অন্যতম ট্র্যাকিং সিস্টেম ফাঁকি দিয়ে জ্বালানি তেল রপ্তানি গন্তব্যে পাঠানো।
ইন্দোনেশিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে আটক এমটি হর্স ট্যাংকারটি গত বছর ভেনেজুয়েলায় ২১ লাখ ব্যারেল কনডেনসেট পরিবহন করেছিল। ইরানের পাশাপাশি ভেনেজুয়েলাও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।