করোনায় মৃতদের দাফনে সহায়তা দেওয়া নিয়ে জটিলতা

করোনার সংক্রমণে মৃত লোকজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য অনুদান পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়েছে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা)। নাগরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে করোনায় মারা যাওয়া লোকজনের পরিবার ও স্বজনদের এই অনুদান দেওয়া হচ্ছে। তবে আবেদনের সঙ্গে মৃত্যুর সনদ যুক্ত করতে গিয়ে দেখা দিয়েছে বিপত্তি।
ফেমা জানিয়েছে, এ পর্যন্ত অনুদান নিতে দুই লাখের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এককালীন নয় হাজার ডলারের অনুদান নিতে আবেদনের সঙ্গে জমা দেওয়া মৃত্যুর সনদ অনেক ক্ষেত্রেই স্পষ্ট নয়। কোভিড-১৯ সংক্রমণ শুরুর পর অনেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন। অনেকেরই মৃত্যু সনদে নিউমোনিয়া ও হৃদ্রোগসহ অন্যান্য কারণে মৃত্যুর কথা লেখা আছে।
কোভিড-১৯ কোনো চিহ্নিত অসুখ নয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত্যু সনদ দেওয়ার সময় মৃত্যুর কারণ হিসেবে সবক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়নি।
ফেমা অনুদান ঘোষণা করে আবেদনের সঙ্গে মৃত্যু সনদের প্রমাণ দিতে বলেছে। মৃত্যু সনদে কোভিড সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হলে তাঁর জন্য অনুদান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে জমা দেওয়া আবেদনে বেশির ভাগ মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিড সংক্রমণের কথা লেখা নেই। আবেদনকারীদের বলা হচ্ছে, মৃত্যু সনদ সংশোধন করে নিয়ে আসার জন্য।এদিকে মৃত্যু সনদ সংশোধন করতে অধিকাংশ চিকিৎসকই সমস্যায় পড়েছেন। তাঁরা বলছেন, আগের মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখন আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবকাশ নেই। কোভিড-১৯ সংক্রমণের তাণ্ডবের সময় কোনো কোনো রাজ্যে প্রতিদিন হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে।ফরেনসিক প্যাথোলজিস্ট প্রিয়া ব্যানার্জি বলেছেন, এখন পেছনে ফিরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই। কোভিড-১৯ নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেছেন, এ রোগের নির্ণয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখনো স্বাস্থ্যসেবীদের হাতে নেই। নির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া মৃত্যু সনদে পরিবর্তন আনারও কোনো সুযোগ নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।নিউইয়র্কের দুজন আইনপ্রণেতা সিনেটর চাক শুমার ও কংগ্রেসওমেন ওকাসিও নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত। এ দুজন আইনপ্রণেতার নির্বাচনী এলাকায় সবচেয়ে বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে।
সিনেটর চাক শুমার বলেছেন, তিনি নিউইয়র্ক রাজ্য ও নগর কর্তৃপক্ষসহ ফেমা কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আলাপ করছেন। বিশেষ ব্যবস্থায় মৃত্যু সনদ সংশোধন এবং দ্রুততার সঙ্গে অনুদানের অর্থ ভুক্তভোগীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সমাধান হিসেবে বলা হচ্ছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারা যাওয়া লোকজনের মৃত্যু সনদের সঙ্গে মূল চিকিৎসকের কাছ থেকে একটি আলাদা সনদপত্র চাওয়া হতে পারে। এ সনদপত্রে চিকিৎসক মৃত্যুর কারণ ব্যাখ্যা করে দিতে পারেন। হ্যারিকেন কার্টিনায় মারা যাওয়া লোকজনের স্বজন ও পরিবারকে এ প্রক্রিয়ায় ফেডারেল অনুদান দেওয়া হয়েছিল।