যুক্তরাষ্ট্র বাগরাম বিমানঘাঁটি হস্তান্তর করতে যাচ্ছে

বাগরাম বিমানঘাঁটি আফগান বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আজ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ওই কর্মকর্তার ভাষ্য, ২০ দিনের মধ্যে বাগরাম বিমানঘাঁটি আফগান বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিমানঘাঁটি বাগরাম। বিশাল এই বিমানঘাঁটি গত শতকের আশির দশকে তৈরি করেছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। আফগানিস্তানে নিয়োজিত মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী এই বিমানঘাঁটি ব্যবহার করে। আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সংশ্লিষ্টতার সময় এই বিমানঘাঁটিতে হাজারো সেনার উপস্থিতি ছিল।
প্রায় দুই দশক ধরে চলা আফগান যুদ্ধের ইতি টানতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের আগে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সব সেনা প্রত্যাহার করবে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
আফগান বাহিনীর কাছে বাগরাম বিমানঘাঁটি কবে হস্তান্তর করা হবে, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। তবে বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি যে আমরা বাগরাম বিমানঘাঁটি হস্তান্তর করব।
এক আফগান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ২০ দিনের মধ্যে বাগরাম বিমানঘাঁটি হস্তান্তর করা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ব্যবস্থাপনার জন্য আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন ইঙ্গিত দিয়েছে যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়ার গতি বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের হিসাব অনুযায়ী, প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া ৩০ থেকে ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
বাগরাম বিমানঘাঁটিকে কেন্দ্র করেই গত দুই দশক আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর তৎপরতা পরিচালিত হয়। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানের কমান্ড স্থাপিত হয় এই বিমানঘাঁটিতে। কারাগার হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে হাজারো তালেবান ও অন্যান্য জঙ্গিদের বন্দী করে রাখা হয়।
সেনা প্রত্যাহারের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র গত ১ মের আগেই ছয়টি সামরিক ঘাঁটি আফগান বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।
গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন, আমেরিকার দীর্ঘতম আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি টানার সময় এসেছে। ১ মে থেকেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হবে। আর ১১ সেপ্টেম্বরের আগেই শেষ মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছেড়ে আসবে।সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০১ সালে এ যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। একসময় ৯৩ হাজারের বেশি মার্কিন সেনার উপস্থিতি ছিল আফগানিস্তানে। এপ্রিলে বাইডেন যখন এ যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন, তখন আফগানিস্তানে প্রায় ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা অবস্থান করছিল।