‘আত্নঘাতী’ মহাকাশযান চালু করেছে নাসা

নন্দন নিউজ ডেস্ক: আত্নঘাতী মহাকাশযান ডার্ট চালু করেছে নাসা, যা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহকে গতিপথ থেকে দূরে সরিয়ে দিবে। মূলত পৃথিবির দিকে আসা গ্রহানুকে বিধ্বস্ত করার জন্য এই মিশনটি চালু করা হয়েছে। সেই পরীক্ষার উদ্দেশ্যে বুধবার (২৪ নভেম্বর) যাত্রা শুরু করেছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার মহাকাশযান ‘ডার্ট’। এই মিশনের জন্য ব্যয়ের পরিমাণ ৩২ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার। ডাইমফোর্স নামের একটি গ্রহানুর উপর পরীক্ষা চালাবে নাসা। মহাকাশ সংস্থা নাসা এই পরীক্ষার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবে যে ডার্ট গ্রহানুটির উপর আঘাত হানলে এর কক্ষপথ কিংবা গতিবেগের কোন পরিবর্তন আসে কিনা। পৃথিবীকে রক্ষা করতে গ্রহানুর গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টা করতে এটি মানুষের প্রথম পরীক্ষা। এটি সায়েন্স ফিকশনের মতো শোনা গেলেও, ডার্ট ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট – একটি বাস্তব পরীক্ষা। এটি বুধবার ভোর ৬ টা ২১ মিনিটে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেস থেকে একটি স্পেসএক্স রকেটে বিস্ফোরিত হয়েছে। লক্ষ্য হল ডাইফোর্সের উপর আছরে পড়া এবং এর গতিপথকে সামান্য পরিবর্তন করা। ডাইমফোর্স ১৬০ মিটার প্রশস্থ। এটি আবার ডিডিমোস নামের আরেকটি বড় গ্রহাণুকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। দুটি গ্রহাণু মিলে একসঙ্গে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবী থেকে ছেড়ে যাওয়া ডার্ট রকেটটি ২০২২ সালের শেষের দিকে ডাইমফোর্সের উপরে বিস্ফোরিত হবে। এদিকে নাসার শীর্ষ বিজ্ঞানী টমাস জুবাচেন বলেছেন, ‘আমরা শেখার চেষ্টা করছি যে পৃথিবীর দিকে আসা কোন হুমকি কীভাবে প্রতিহত করা যায়’। তবে বলা যায় পরীক্ষা চালানো অনুগ্রহ পৃথিবীর জন্য কোন হুমকি নয়। কিন্তু গ্রহগুলো নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট (এনইওএস) নামে একটি শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত, যা পৃথিবী থেকে ৪৮ মিলিয়ন কিলোমিটারের মধ্যে আসে। তবে ১৬০ মিটার প্রসস্থের কোন গ্রহাণু পৃথিবীতে বিস্ফোরিত হলে সেটি একটি পারমাণবিক বোমার চাইতেও বহুগুণ বেশি ভয়ংকর হবে বলে জানিয়েছে নাসা। কেননা এই বিস্ফোরণ ঘটলে জনবসতি আছে এমন সকল এলাকায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে এবং তা ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হবে। নাসার ‘প্ল্যানেটারি ডিফেন্স’ সংক্রান্ত দফতরের কেলি ফাস্ট বলেছেন, ডাইমফোর্সের গতিবেগ বা কক্ষপথ পরিবর্তন করার জন্য ডার্টের আঘাত খুবই সামান্য। তবে আঘাতের আগে গ্রহাণুকে চিহ্নিত করা গেলে তা এড়ানোর জন্য গৃহীত এই পরিবর্তনই যথেষ্ট।