যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেন ইস্যুতে ছাড় দেবে না রাশিয়া

নন্দন নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনার উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। সেনাবাহিনী ফিরিয়ে নিতে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ছে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আজ রোববার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আলোচনায় বসেছে রাশিয়া। আলোচনার আগে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াকভ বলেছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে তাঁর দেশ কোনো ছাড় দেবে না। খবর এএফপির।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে মরিয়া ইউক্রেন। তবে এতে নারাজ রাশিয়া। গত বছর শেষের দিক থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে মস্কো। তাদের দাবি, ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করা যাবে না। ইউরোপের পূর্ব দিকে আর বিস্তার ঘটানো যাবে না ন্যাটোর।
রোববার থেকে শুরু হয়ে জেনেভায় সপ্তাহব্যাপী চলবে কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনা। সেখানে ন্যাটো ও অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো–অপারেশন ইন ইউরোপের (ওএসসিই) সঙ্গে বৈঠক করবে রাশিয়া। আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারম্যান। রাশিয়ার পক্ষে থাকছেন সের্গেই রিয়াকভ।
আলোচনার আগে রুশ বার্তা সংস্থাকে রিয়াকভ বলেন, ইউক্রেন বিষয়ে কোনো ছাড় দিতে রাজি হবে না রাশিয়া। এটি সম্পূর্ণ আলোচনার বাইরে থাকবে। এ ছাড়া গত কয়েক দিনে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে আসা নানা ইঙ্গিত রাশিয়াকে হতাশ করেছে বলে উল্লেখ করেছেন রিয়াকভ। ব্রাসেলসেই ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান কার্যালয় অবস্থিত।
এদিকে ওয়েন্ডি শারম্যান বলেছেন, সংকট সমাধানে রাশিয়ার আনা অনেক প্রস্তাবই সফলতার মুখ দেখবে না। ‘রাশিয়া ইউক্রেনের মাথায় বন্দুক ধরে আছে’ বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এ কারণে আলোচনার কোনো অগ্রগতি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিয়ে গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া আরও আগ্রাসন চালালে আমরা এর কড়া জবাব দিতে প্রস্তুত। তবে রাশিয়া চাইলে কূটনৈতিক সমাধান এখনো সম্ভব।’
রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালালে এর পরিণতি মারাত্মক হবে বলে এর আগে এক ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সংশ্লিষ্ট এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালালে ন্যাটোর সদস্যদেশ পোল্যান্ড ও বাল্টিক দেশগুলোতে আরও সেনা মোতায়েন করবে ওয়াশিংটন। এমন কিছু হলে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলোও।
২০১৪ সালে এক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে উত্খাত হয় তত্কালীন ইউক্রেন সরকার। ওই সরকার ইউরোপের ঘনিষ্ঠ হওয়ার বিরুদ্ধে ক্রেমলিনের পক্ষে ছিল। পরে ক্রেমলিন দখল করে নেয় রাশিয়া। এ ছাড়া পূর্ব ইউক্রেনে এক অভ্যুত্থানের পেছনে দেশটির মদদ ছিল। অভ্যুত্থানে ১৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।