ইউক্রেন সংকটের মধ্যেই চীন-রাশিয়ার বাণিজ্যে নতুন রেকর্ড

নন্দন নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমাদের সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ক ক্রমেই তিক্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে চলছে ওয়াশিংটনের বাণিজ্য যুদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো যাচ্ছে। বাড়ছে দেশ দুইটির মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি। গত বছর দেশ দুইটির মধ্যে বাণিজ্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। শনিবার (২২ জানুয়ারি) নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২১ সালে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যে হয়েছে প্রায় ১৪৭ বিলিয়ন ডলার বা চৌদ্দ হাজার সাতশ কোটি ডলার। যা আগের বছরের তুলনায় ৩৫ দশমিক আট শতাংশ বেশি। চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের সম্প্রতি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যদিও মস্কো এখন পর্যন্ত এ সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে চীনে রাশিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধি এ মাসের শুরুতে জানায় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ১৪০ বিলিয়ন ডলার বা চৌদ্দ হাজার কোটি ডলার ছাড়াতে পারে।
জানা গেছে, আগামী মাসে শীতকালীন অলিম্পিক সামনে রেখে চীন সফরের যাবেন পুতিন। সেখানে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে তার। তাছাড়া সে সময় দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চুক্তি হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমাদের সঙ্গে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে রাশিয়ার। এর ফলেই চীন ও রাশিয়া একে অপরের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে।
রাশিয়ার ফার ইস্টার্ন ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক আর্টিওম লুকিন বলেন, আমার মনে হচ্ছে পুতিন চীনের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে কোনো নিশ্চয়তা বা আশ্বাস পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়ার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয় তাহলে তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।
গত এক দশকে অর্থনৈতিক সহযোগিতার পাশাপাশি দেশ দুইটি রাজনৈতিক বন্ধন দৃঢ় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১০ সালের পর দেশ দুইটির মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে ১৬৭ শতাংশ। গত কয়েক বছরে বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কারণেই তাদের মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে।
যার মধ্যে অন্যতম হলো পাঁচ হাজার পাঁচশ কোটি ডলার ব্যয়ে সাইবেরিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপ লাইন প্রকল্প, দুই হাজার পাঁচশ কোটি ডালার ব্যয়ে ইস্টার্ন সাইবেরিয়া-প্যাসিফিক মহাসাগর পাইপলাইন প্রকল্প ও এক হাজার তিনশ কোটি ডলার ব্যয়ে আমুর গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট নির্মাণ।