যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্ত সেতু ৬ দিন পর অবরোধ মুক্ত

নন্দন নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদরত ট্রাক চালকরা উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে ব্যস্ততম বাণিজ্য রুট ছয় দিন অবরোধ করে রাখার পর তা ফের গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি।
রোববার রাতে কানাডার পুলিশ অবরোধ সরিয়ে দেওয়ার পর ওই সীমান্ত ক্রসিংটি দিয়ে ফের যান চলাচল শুরু হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার আদালতের একটি আদেশের পর অন্টারিও প্রদেশের উইন্ডসরের অ্যাম্বাসেডর সেতুতে অভিযান চালায় পুলিশ। তারা সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে ও সেতু দখল করে রাখা আন্দোলনকারীদের ও তাদের গাড়িগুলো সরিয়ে দেয়।
এই অবরোধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটের গাড়ি উৎপাদনকারীদের সরবরাহ চেইন বন্ধ হতে বসেছিল। পরিস্থিতির চাপে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা ফোর্ড মোটর কোম্পানিসহ জেনারেল মোটরর্স কোম্পানি ও টয়োটা মোটর কর্পোরেশন তাদের উৎপাদন হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছিল।
এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে প্রায় ৩৬ কোটি ডলারের পণ্য পরিবাহিত হয়, যা দুই দেশের মোট বাণিজ্যের ২৫ শতাংশ।ঘটনাস্থল থেকে ২০-৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে উইন্ডসরের পুলিশ জানিয়েছে। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি গাড়িও জব্দ করেছে পুলিশ।
শনিবার অবরোধস্থলে শ’ খানেক আন্দোলনকারী উপস্থিত থাকলেও রোববার তা কমে প্রায় ৪৫ জনে নেমে আসে। এরপর বাস, সাঁজোয়া যানসহ ৫০টিরও বেশি গাড়ি নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।
‘অবৈধ তৎপরতার’ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড়া দেওয়া হবে না বলে উইন্ডসর পুলিশ জানিয়েছে।
আন্দোলনকারীরা কানাডার রাজধানী অটোয়ার কেন্দ্রস্থলে ১৭ দিন ধরে অবস্থান ধর্মঘট করে আসছে। এতে অচল হয়ে পড়া রাজধানীর বাসিন্দারা ধৈর্য হারিয়ে রোববার থেকে পাল্টা প্রতিবাদে নেমেছে। এদিন ধর্মঘটে যোগাদান করতে আসা গাড়িগুলোকে বাধা দেয় তারা।কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় সারে শহরের প্যাসিফিক হাইওয়ে সীমান্ত ক্রসিং রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেয় আন্দোলনকারীদের প্রায় ২০০ জনের একটি দল। ওই সীমান্তের যুক্তরাষ্ট্রের পাশে আন্দোলনকারীদের ছোট একটি দল জড়ো হয়ে ওইদিক মুখি যান চলাচল বন্ধ করে দেয় বলে জানিয়েছেন রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী ফটো সাংবাদিক।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পণ্য আনানেওয়া করা ট্রাক চালকদের জন্য করোনাভাইরাস টিকা নেওয়া অথবা কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করার পর সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় ধর্মঘট শুরু করে কানাডার ট্রাক চালকরা। তথাকথিত ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামের এ আন্দোলনকারীরা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ি নিয়ে কানাডার জাতীয় রাজধানী অটোয়ার কেন্দ্রস্থল অবরোধ করে।
রোববার ১৭ দিনে পড়া এই প্রতিবাদ রূপান্তরিত হয়ে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ, কার্বন কর ও অন্যান্য ইস্যুর বিরুদ্ধে বৃহত্তর একটি আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। লোকজন গাড়ি, পিকআপ ট্রাক ও ট্রাক্টর নিয়ে এই অবরোধে যোগ দিচ্ছে।